সূরা কাহাফের ১১০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
ﻗﻞ ﺍﻧﻤﺎ ﺍﻧﺎ ﺑﺸﺮ ﻣﺜﻠﻜﻢ ﻳﻮﺣﻲ ﺍﻟﻲ
আ‘লা হযরত কিবলা এ আয়াতের অনুবাদ এভাবে করেছেন যে-
ﺗﻢ ﻓﺮﻣﺎٶ ﻇﺎﮨﺮﻯ ﺻﻮﺭﺕ ﺑﺸﺮﻯ ﻣﻴﻦ ﺗﻮ ﻣﻴﻦ ﺗﻢ ﺟﻴﺴﺎﮨﻮﻥ ﻣﺠﻬﮯ ﻭﺣﻰ ﺃﺗﻰ ﮨﮯ
“(হে নবী!) আপনি বলুন, প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে তো আমি তোমাদের মত, আমার নিকট ওহী আসে)।” (আ‘লা হযরত, কানযুল ঈমান)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে-
ﻗﻞ ﻳﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﻣﺎ ﺍﻧﺎ ﺍﻻ ﺃﺩﻣﻰ ﻣﺜﻠﻜﻢ ﻓﻰ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻭﻣﺴﺎﻭﻳﻜﻢ ﻓﻰ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﺼﻔﺎﺕ ﺍﻟﺒﺸﺮﻳﺔ
‘বলুন হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমিতো আকৃতিতে তোমাদের মতই মানুষ, আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।’ (আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩৫৩)
*** কাজেই তিনি বাশারও এবং নূরও। আর বাশার হওয়া নূর হওয়ার প্রতিবন্ধকও নয়। নূর ও বাশার এই দুই বৈশিষ্ট্য যে একই সত্ত্বার মধ্যে একত্রিত হতে পারে তা নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। হযরত জিব্রাইল নূর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে এ আয়াতে বাশার বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
ﻓَﺎَٔﺭْﺳَﻠْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﺭُﻭﺣَﻨَﺎ ﻓَﺘَﻤَﺜَّﻞَ ﻟَﻬَﺎ ﺑَﺸَﺮًﺍ ﺳَﻮِﻳًّﺎ
‘অতঃপর তাঁর (মরিয়ম) প্রতি আমি আমার রূহানী সত্ত্বাকে প্রেরণ করেছি। সে তাঁর সামনে একজন সুঠাম মানুষের (বাশার) রূপে আত্মপ্রকাশ করেন।’ (সূরা মরিয়ম: ১৭)
**** কিন্তু এ মানবীয়তা তাঁর বিশেষ গুণ (ﺻﻔﺎﺕ ), যাত (ﺫﺍﺕ ) নয়। আর নবীজীর জাত (জিনস) বা হাকীকতও মানুষ নয়, এ মানবীয়তা তাঁর একটা পোষাক মাত্র। আর এটাই আমাদের আকাবেরদের আক্বীদা। যেমন, আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন-
ﺁﻧﺤﻀﺮﺕ ﺑﺘﻤﺎﻡ ﺍﺯ ﻓﺮﻕ ﺗﺎ ﻗﺪﻡ ﮨﻤﮧ ﻧﻮﺭ ﺑﻮﺩ ﮐﮧ ﺩﯾﺪۂ ﺣﯿﺮﺕ ﺩﺭ ﺟﻤﺎﻝ ﺑﺎﮐﻤﺎﻝ ﻭﯼ ﺧﯿﺮﮦ ﻣﯿﺸﺪ ﻣﺜﻞ ﻣﺎﮦ ﻭﺁﻓﺘﺎﺏ ﺗﺎﺑﺎﻥ ﻭﺭﻭﺷﻦ ﺑﻮﺩ ﻭﺍﮔﺮ ﻧﮧ ﻧﻘﺎﺏ ﺑﺸﺮﯾﺖ ﭘﻮﺷﯿﺪﮦ ﺑﻮﺩﯼ ﮨﯿﭽﮑﺲ ﺭﺍ ﻣﺠﺎﻝ ﻧﻈﺮ ﻭﺍﺩﺭﺍﮎ ﺣﺴﻦ ﺍﻭ ﻣﻤﮑﻦ ﻧﺒﻮﺩﯼ ﻭﮨﻤﯿﺸﮧ ﺟﻮﮨﺮ ﻭﻯ ﻧﻮﺭﯼ ﺑﻮﺩ ﮐﮧ ﺍﻧﺘﻘﺎﻝ ﮐﺮﺩ ﺍﺯ ﺍﺻﻼﺏ ﺁﺑﺎﻭﺍ ﺭﺣﺎﻡ ﺍﻣﮭﺎﺕ ﺍﺯﺯﻣﻦ ﺁﺩﻡ ﺗﺎ ﺍﻧﺘﻘﺎﻝ ﺑﺼﻠﺐ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﮧ ﻭﺭﺣﻢ ﺁﻣﻨﮧ ﺳﻼﻡ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ
‘হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপদমস্তক ছিলেন নূর। তাঁর নূর বা সৌন্দর্য প্রভায় দৃষ্টিশক্তি উল্টো যেন ফিরে আসত। তিনি যদি মানবীয় পোশাক পরিধান না করতেন, তবে কারো জন্য তাঁর সৌন্দর্য প্রভা উপলব্ধি করা সম্ভব হত না। তাঁর ﺟﻮﻫﺮ ﻧﻮﺭﻯ ‘জাওহারে নূরী’ বা নূরানী জাওহার হযরত আদম আলাইহিস সালাম হতে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত পবিত্র ঔরসে ও পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হয়ে চলে আসছিল।’ (আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়্যত: ১/১৩৭)
আল্লামা ইসমাইল হাক্কী হানাফী বারুসাভী সূরা ফাতহের ১০ নং আয়াত- ﺍﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺒﺎﻳﻌﻮﻧﻚ ﺍﻧﻤﺎ ﻳﺒﺎﻳﻌﻮﻥ ﺍﻟﻠﻪ (হে হাবীব! নিশ্চয় যারা আপনার নিকট বায়‘আত হয়েছে, নিঃসন্দেহে তাঁরা আল্লাহরই নিকট বায়‘আত হয়েছে) এর তাফসীর করতে গিয়ে ইমাম ওয়াসেতী থেকে বর্ণনা করেন-
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻮﺍﺳﻄﻲ : ﺃﺧﺒﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻬﺬﻩ ﺍﻻﻳﺔ ﺃﻥ ﺍﻟﺒﺸﺮﻳﺔ ﻓﻲ ﻧﺒﻴﻪ ﻋﺎﺭﻳﺔ ﻭﺍﺿﺎﻓﺔ ﻻﺣﻘﻴﻘﺔ
‘ইমাম ওয়াসেতী বলেন, আল্লাহ পাক এ আয়াতে কারীমা দ্বারা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, নিশ্চয় তাঁর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাশারিয়াত বা মানবত্ব ক্ষণস্থায়ী এবং তা (পোষাক স্বরূপ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা (বাশারিয়াত) তাঁর মূল নয়।’ (আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১)
আরোও বিস্তারিত পড়েন এখানে ক্লিক করে👉🏻 http://www.yanabi.in/discussion/comment/154/categories/categories/apps
শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
নবীজি নূর
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন